এক মাসে ৩৭ সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ ৬৬ অপরাধীকে গ্রেফতার করে রেকর্ড করলেন এসআই মহসিন চৌধুরী-পিপিএম!

আবদুল্লাহ আল আজিজ, কক্সবাজার জার্নাল :

যোগদানের এক মাসের মাথায় বিভিন্ন মামলায় দীর্ঘদিনের সাজাপ্রাপ্ত ৩৭ জন আসামিসহ, ওয়ারেন্টভুক্ত, মাদক, সামাজিক দাঙ্গা, ও নানাবিধ অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ৬৬জন আসামিকে গ্রেফতার করে স্বল্প সময়ের মধ্যে জনসাধারণের ভালোবাসা অর্জন করে প্রশংসায় ভাসছেন মহেশখালী থানার নতুন এসআই (উপপরিদর্শক) মহসিন চৌধুরী -পিপিএম।

জানা গেছে, গত একমাস আগে চকরিয়া হারবাং পুলিশ ফাঁড়ি থেকে বদলী হয়ে মহেশখালী থানায় নতুন এসআই (উপপরিদর্শক) হিসাবে যোগদান করেন মহসিন চৌধুরী -পিপিএম। মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ কায়সার হামিদের নেতৃত্বে তিনি যোগদানের পরদিন রাতে মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার করে শুরু হয় অভিযান। এরপর থেকে টানা অক্লান্ত পরিশ্রমে চলতে থাকে বিশেষ অভিযান। এর ফলস্বরূপ এক মাসের মাথায় মাদকসহ বিভিন্ন মামলার ৩৭ জন সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ ৬৬ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করে রীতিমতো অপরাধ প্রবণতা হ্রাস করে এলাকার মানুষের সন্তুষ্টি অর্জন করেছেন।

তিনি যোগদানের পর থেকেই থানা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তির উত্তরণ ঘটানোর জন্য সচেষ্ট হয়েছেন। সেই সাথে অপরাধ দমন ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে তিনি ব্যাপক তৎপরতা প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। আর এই ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে এলাকাবাসীর উদ্বেগ কিছুটা হলেও কমেছে।

ওসি কায়সার হামিদের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনীকে স্থানীয়ভাবে ভূমিকা রাখার উপযোগী করে গড়ে তুলতে নবাগত এসআই (উপপরিদর্শক) মহসিন চৌধুরী-পিপিএম এর পরিকল্পিত পদক্ষেপ ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন শান্তি প্রিয় জনগণ।

পুলিশের এই কর্মকর্তার প্রশংসা করে স্থানীয়রা জানান, মহসিন চৌধুরী থানায় যোগদানের পর থেকে তিনি এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে একের পর এক যে অভিযান পরিচালনা করছেন তা সত্যই প্রশংসার দাবি রাখে। বিশেষ করে তার বিচক্ষণতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অপরাধীদের আনাগোনা কমেছে এবং সেই সাথে কমেছে অপরাধ প্রবণতাও। তিনি চুরি, সন্ত্রাস ও মাদক বন্ধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে তার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

এক প্রতিক্রিয়ায় এসআই মহসিন চৌধুরী-পিপিএম বলেন, জনগণ পুলিশের বন্ধু, জনগণের সেবায় পুলিশের মুখ্য দায়িত্ব। যেদিন থেকে পুলিশের ইউনিফর্ম গায়ে দিয়েছি সেদিন থেকেই জনগণের সেবায় নিজেকে নিবেদিত রেখেছি। আমি মহেশখালী থানায় যোগদান করে প্রথম ভিশন ছিল এলাকায় অপরাধ প্রবণতা কমানোর। সেই ভিশন ও মিশন নিয়ে কাজ করে এ পর্যন্ত ৬৬ জন অপরাধীকে কারাগারে পাঠিয়েছি। জনগণকে নিরাপত্তা দিয়ে তারা শান্তিতে থাকলে আমাদের পুলিশি সেবার সফলতা আসে এবং আমাদেরও অনেক ভালো লাগা কাজ করে।

তিনি আরও বলেন, মহেশখালীকে একটি সুস্থ্য সুন্দর অপরাধ মুক্ত থানা হিসেবে রুপান্তরিত করা হবে। আসামী গ্রেফতারের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান। সেই সাথে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

প্রসঙ্গত, এসআই মহসিন চৌধুরী ২০০৩ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে। এরপর থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করেছেন। নিজের মেধা ও বিচক্ষণতা দিয়ে সমাধান করেছেন একাধিক মামলার জট।

তার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ২০১৭ সালে আইজি ব্যাজ, লক্ষীপুর জেলায় ৩৮ বার পুরষ্কার লাভ করেন। এরপর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চলে আসেন সমুদ্র নগরী কক্সবাজারে। এখানেও তিনি স্বাক্ষর রাখেন তার বিচক্ষণতার। সততা নিষ্ঠায় তিনি অল্পদিনে ভরসার নাম হয়ে ওঠেন। যার ফল হিসেবে কক্সবাজারে যোগদানের ১৪ মাসের মাথায় ২০২২ সালে আবারো পান আইজি ব্যাজ। এছাড়াও কক্সবাজার জেলায় ২৮ বার শ্রেষ্ঠত্বের পুরষ্কার পেয়েছেন এবং তারই ধারাবাহিকতায় সর্বোচ্চ স্বীকৃতি স্বরূপ ঘোষিত হয়েছিলেন পুলিশের সর্বোচ্চ পদক “প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল” এ। এটি একটি বিরল সম্মাননা।

মহসিন চৌধুরী ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানার কানাইমাদারি গ্রামে এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার জন্মের ৪১ দিন পর তার বাবা আমিন শরিফ চৌধুরী মারা যান। তার পিতা মরহুম আমিন শরিফ একজন সৎ ও মানবিক ব্যক্তি ছিলেন। ৪ বোনের মধ্যে একমাত্র ভাই তিনি। মায়ের পরিশ্রম, দোয়া ও অনুপ্রেরণায় ২০০৩ সালে খাগড়াছড়ি ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএ পাস করে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন।

আরও খবর